ডায়াবেটিস রোগীরা বিভিন্ন শারিরীক সমস্যায় ভোগেন বিশেষ করে বয়স্করা। যাদের বয়স বেশি তাদের একটি কমন সমস্যা হলো ফ্রোজেন সোল্ডার বা কাঁধে ব্যথা। যার প্রধান কারণ অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস, যা পরবর্তীতে কাঁধের জয়েন্টকে শক্ত করে। যার ফলে রোগী ধীরে ধীরে বাহু উপরে বা পিছনের দিকে তুলতে অক্ষম হয়। জামাকাপড় পরতে পারেন না, এমনকি চুল আঁচড়াতেও কষ্ট হয়।
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা- কাদের বেশি হয়
♦ ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা যারা ডায়াবেটিসে ভোগেন। বিশেষ করে নারীরা।
♦ যাদের থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা রয়েছে।
♦ যাদের হৃদরোগ আছে।
♦ 'পারকিনসন্স ডিজিজ’ রোগী।
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা- কারণ
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা অনেক কারণে হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ-
(১) হাত দিয়ে ভারী কিছু তুলতে গিয়ে সামান্য ব্যথা অনুভূত হলেও তেমন গুরুত্ব দেয়নি, পরে দেখা যায় কাঁধের ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়ছে, সাথে সাথে কাঁধের নড়াচড়াও কমছে।
(২) দেখা যায় রোগীর সার্ভিকাল স্পন্ডাইলোসিস বা ঘাড়ের ডিজেনারেটিভ ডিজিজ আছে যার কারনে ব্যাথা ঘাড় থেকে হাত পর্যন্ত বিকিরণ করে এবং এই ব্যাথার কারনে রোগীর হাতের নড়াচড়া কমে যায় এবং ধীরে ধীরে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়।
(৩) একটি বাস বা গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় হঠাৎ শক্ত ব্রেকিংয়ের সময়, যাত্রী নিজের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তার হাত দিয়ে গাড়ির হ্যান্ডেল শক্ত করে ধরে রাখে এবং ব্যথা অনুভব করে যা পরে কাঁধে ব্যথার কারণ হয়।
(৪) তাছাড়া বয়স চল্লিশের বেশি হলে আমাদের ডিজেনারেটিভ সমস্যা শুরু হলে জয়েন্টের অভ্যন্তরীণ সাইনোভিয়াল ফ্লুইড কমতে থাকে। এর ফলে কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা- রোগ নির্ণয়
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা নির্ণয়ের জন্য রোগীর রক্তে সুগার লেভেল ঠিক আছে কি না জানার জন্য ব্লাড সুগার টেস্ট করতে হবে এবং হাতের একটা এক্সরে করা লাগবে।
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা- করণীয়
ডায়াবেটিস থাকলে তা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
ব্যথা উপশম: ব্যথা সৃষ্টি করে এমন নড়াচড়া এড়িয়ে চলুন। আপনার হাত আলতো করে সরান। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
অত্যধিক ব্যথা হলে, একজন অর্থোপেডিক বা শারীরিক ওষুধের ডাক্তার বাহুতে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিতে পারেন।
সার্জারি: ফ্রোজেন সোল্ডারে খুব কমই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তবে, অন্য চিকিৎসায় কাজ না হলে ডাক্তার সার্জারির পরামর্শ দিতে পারেন।
আকুপাংচার: আকুপাংচারের মতো বিকল্প চিকিৎসাও আপনাকে এই ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এই পদ্ধতিতে ব্যথা কমাতে আপনার ত্বকে সূক্ষ্ম সূঁচ ঢোকানো হয়। আশা করি, বেশিরভাগ ফ্রোজেন সোল্ডার এ আক্রান্ত রোগী ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে যাবেন।
আরও পড়ূনঃ ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা- প্রতিরোধ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখা এবং কাঁধে যেন কোনো ব্যথা না লাগে সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পরিশেষে
আরও পড়ুনঃ গুগল নিউজে
0 মন্তব্যসমূহ