ইসলামী অনুশাসনের একটি অনন্য অভিব্যক্তি হল ফিতরা। সাদাকাতুল ফিতর দ্বিতীয় হিজরির শা'বান মাসে নির্ধারিত হয়। এটা অসহায় দরিদ্রদের ন্যায্য পাওনা। রমজান, ফিতরা ও ঈদ এক সূত্রে গাথা। ফিতরার মধ্যে নিহিত রয়েছে গরীব প্রতিবেশীদের আনন্দ আর ঈদ উৎসব। রমজান মাসে ঈদের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম।
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর এর গুরুত্ব অনুধাবন করতঃ আমাদের আজকের পোষ্টটি সাজানো হয়েছে। আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা জানব, ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর কি, ফিতরা অর্থ কি, ফিতরা কখন দিতে হয়, ফিতরার পরিমাণ। ফিতরার পরিমাণ কত, সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ, ফিতরা দেয়ার নিয়ম, ফিতরা দেওয়ার নিয়ম, ফিতরা কত টাকা ২০২২, ফিতরা কত টাকা ২০২৩ ইত্যাদি বিষয়গুলো। আশা করি সম্পূর্ণ পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর কি?
ফিতরা বা ফেতরা আরবী শব্দ, যা ইসলামে যাকাতুল ফিতর বা সাদাকাতুল ফিতর নামে অভিহিত। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে বলা হয় ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর। এই দানকে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়ে থাকে। সারাদিন রোজা থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতার এর মাধ্যমে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করা হয়। সেজন্য রমজান মাস শেষান্তে এই দানকে যাকাতুল ফিতর বা সকালের আহারের যাকাত বলা হয়। নারী-পুরুষ, স্বাধীন-পরাধীন, শিশু-বৃদ্ধ, ছোট-বড় সকল মুসলিম নর-নারীর জন্য ফিতরা বা ফেতরা প্রদান করা ওয়াজিব।
ফিতরা অর্থ কি?
ফিতরা বা ফেতরা আরবী শব্দ, যাকে ইসলামে যাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরের সদকা) নামে পরিচিত করা হয়েছে। ফিতর বা ফাতুর বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হ্যযেছে যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন
ফিতরা কখন দিতে হয়
ফিতরা দেওয়ার উপযুক্ত সময় হলো ঈদ-উল-ফিতর এর দিন সুুুবহে সাদিক এর পর থেকে ঈদের নামাজের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত । তবে এর আগে ফিতরা আদায়ে কোনো বিধি নিশেষ নেই। এছাড়া কেউ যদি কোনো কারণে ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করতে না পারে তবে ঈদের পরেও তা আদায় করতে পারবে। তবে আমাদের প্রিয় নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বেই ফিতরা আদায় করতেন, যাতে গরিব-অসহায় মানুষ এই টাকায় কেনাকাটা করে ধনীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারে।
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
প্রকৃত হকদারকেই ফিতরা দিতে হবে। যাকে তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে না। কাকে ফিতরা দেওয়া যাবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এবং সেটা হল-
যাদের যাকাত পাওয়ার অধিকার আছে। তারা সাদাকাহ ফিতরের হকদার। যেসব খাত ও ব্যক্তি জাকাতের অধিকারী নয়, তাদের ফিতরা দেওয়া যাবে না। পবিত্র কুরআনের সূরা তওবার ৬০ নং আয়াত দ্বারা এই বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
যাকাত শুধুমাত্র ফকির, গরীব, যাকাত আদায়কারী এবং যাদেরকে চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরদের মুক্তির জন্য। ইহাই হলো আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।' (সূরা তওবা: আয়াত ৬০)
মনে রাখতে হবে- হাদিসে উল্লেখিত গম, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির হচ্ছে ফিতরা পণ্য। এসব পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করলে গবীর মানুষের কোনো লাভ হবে না। তাই এসব পণ্যের সমপরিমাণ অর্থ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হলে গরিব মানুষ উপকৃত হবে এবং এটি দরিদ্র এবং অসহায় মানুষের জন্য নগদ অর্থের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে।
ফিতরা আদায়ের সর্বোত্তম উপায়- পরিবারের মধ্যে যারা দরিদ্র ও অসহায় তারাই প্রথম ফিতরার হকদার। আর কাউকে অন্তত একটি পূর্ণ ফিতরা দেওয়া উত্তম। প্রয়োজনের ভিত্তিতে একজনকে একাধিক ব্যক্তির ফিতরাও দেওয়া যেতে পারে। এতে গরিব-অসহায় ব্যক্তিদের এই অর্থে উপকার হয় যে, ফিতরার এই অর্থ যেকোনো উপযুক্ত উপায়ে ব্যবহার করতে পারে।
ফিতরার পরিমাণ। ফিতরার পরিমাণ কত?। সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ সম্পর্ক হাদিসে মোট ০৫ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। যথা-যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম।
হাদিস শরিফে উল্লেখ রয়েছে-
أدوا عن كل حر وعبد صغير أو كبير نصف صاع من بر أو صاعا من تمر أو صاعا من شعير
অর্থ: ‘তোমরা প্রত্যেক স্বাধীন ব্যক্তি এবং গোলামের (ছোট কিংবা বড়) পক্ষ থেকে আধা সা’ গম অথবা এক সা’ খেজুর কিংবা এক সা’ যব আদায় কর।’ [সুনানুত দারাকুতনি, হাদিস: ২১৩৬]
ফিতরা প্রদানের জন্য যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস প্রদানের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য যে কোনো একটির এক সা’ অর্থাৎ ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম পরিমাণ কিংবা তার বাজার মূল্যের সমপরিমাণ টাকা ফিতরা হিসাবে দিতে হবে।
আর গম এর ক্ষেত্রে আধা ‘সা’ অর্থাৎ প্রায় ১ কেজি ৭৫০ গ্রাম পরিমাণ গম কিংবা তার বাজার মূল্যের সমপরিমাণ টাকা ফিতরা হিসাবে দিতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো এক ‘সা’ পরিমাণ কত কেজি? এক ‘সা’ পরিমাণ হলো সর্বনিম্ন ২ কেজি ৪০০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৩ কেজি ৩৩০ গ্রাম পর্যন্ত পরিমাণ কে বুঝায়। যদিও এই বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। মতভেদের বিভ্রান্তি এড়াতে এবং দরিদ্রদের উপকার করার জন্য, আমরা এখানে ১ ‘সা’ = ৩ কেজি ৩৩০ গ্রাম ধরেছি।
আপনার সুবিধার জন্য উক্ত খাবারগুলোর তুলনামূলক বাজারমূল্য উল্লেখ করা হলো।
(ক) এক কেজি যবের মূল্য ৯০/- টাকা। এ বিবেচনায় একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯৭/- (দুইশত সাতানব্বই টাকা মাত্র)।
(খ) মধ্যম ধরনের খেজুরের মূল্য প্রতি কেজি ৫০০/- টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৫০.০০ (এক হাজার ছয়শত টাকা মাত্র)। তবে সবচেয়ে ভালো খেজুরের নাম হলো আজওয়া ও মরিয়ম খেজুর যার দাম কেজি প্রতি ৮০০.০০-১৫০০.০০ সেই হিসাবে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ২,৬৪০.০০ থেকে ৪,৯৫০.০০ টাকা।
(গ) কিসমিস প্রতি কেজি ৪৫০.০০ টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ১,৪৮৫.০০ (এক হাজার চারশত পচাশি) টাকা।
ঘ) পনির প্রতি কেজি ৬৬৫.০০ টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ২,২০০.০০ (দুই হাজার দুইশত) টাকা।
ঙ) গম প্রতি কেজি ৪৫.০০ টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৮.০০ (আটাত্তর) টাকা।
হাদিস শরীফে এই ৫টি দ্রব্যের যে কোন একটি দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায়ের সুযোগ দেওয়া রয়েছে যাতে মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী আদায় করতে পারে।
ফিতরা দেয়ার নিয়ম। ফিতরা দেওয়ার নিয়ম
হাদিসের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ২ পরিমাপে ৫টি জিনিস দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করা যায়। আর সেগুলো হলো গম, যব, কিসমিস, খেজুর, পনির। এর মধ্যে গমের পরিমাপ অর্ধ সা এবং বাকি সবগুলোর পরিমাণ এক সা। আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোন একটি দিয়ে এই ফিতরা দিতে পারেন। বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবে তা উপস্থাপন করা হলোঃ
(ক) যব: যার পরিমাপ হবে এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান গড় বাজার মূল্য- ২৯৭.০০ টাকা।
(খ) খেজুর: খেজুর এর পরিমাপও এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান গড় বাজার মূল্য- ১ হাজার ৬৫০ টাকা।
(গ) কিসমিস: যার পরিমাপ এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান গড় বাজার মূল্য- ১ হাজার ৫০০ টাকা।
(ঘ) পনির : পনিরের পরিমাপও এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান গড় বাজার মূল্য- ২ হাজার ২০০ টাকা।
(ঙ) গম/আটা: গম বা আটার পরিমাপ হবে অর্ধ সা। যা ৮০ তোলা সেরের মাপে ১ সের সাড়ে বারো ছটাক। আর কেজির হিসাবে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম। তবে ন্যূনতম পূর্ণ ২ সের/কেজির মুল্য আদায় করা উত্তম ৷ যার বর্তমান গড় বাজার মূল্য ৮০ টাকা।
এখানে উল্লেখ্য যে, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির-এর ক্ষেত্রে ৪ কেজির মূল্য পরিশোধ করাই উত্তম।
ফিতরা কত টাকা ২০২২
ফিতরার মাসাল-মাসায়েল সম্পর্কিত সর্বাধিক জনপ্রিয় হাদীসটি সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ যে হাদিস্টি বর্ণনা করেছেন সাহাবী হজরত ইবনে ওমর (রা.)। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন ফিতরা হবে এক সা পরিমাণ খেজুর বা যব। এছাড়া অন্যান্য হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানি যে, প্রিয় নবী (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণ তাদের জীবদ্দশায় খেজুর, যব, গম বা আটা, পনির ইত্যাদি দিয়ে সদকাতুল ফিতরা আদায় করতেন।
ইসলামিক পন্ডিতরাও পরবর্তীতে এই খাদ্যদ্রব্যের সাথে ফিতরাহ ব্যবহার ও নির্দেশ করেছেন। যাইহোক, সময়ের সাথে সাথে মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, মুহাদ্দিসগণ ঐ মালামালের ওজনের সমপরিমাণ অর্থে ফিতরা আদায় করতে সম্মতি প্রদান করেছেন।
যেহেতু খাদ্য সামগ্রীর দাম সময়ের সাথে সাথে ওঠানামা করে, তাই টাকা বা রুপিতে ফিতরার হারও বছরের পর বছর ওঠানামা করে।
বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফেতরার হার নির্ধারণ করে। এ বিষয়ে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটিও রয়েছে। প্রতি বছর রমজান শুরুর পর এই কমিটি বাজার বিশ্লেষণ করে রমজানের প্রথম সপ্তাহে সাদাকাতুল ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করে। যেহেতু রমজান ২০২২ ৩রা এপ্রিল ২০২২ তারিখে শুরু হয়েছিল, কমিটি ২০২২ সালে সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করে ৯ই এপ্রিল ২০২২-এ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
শনিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় ২০২২ সালের ফিতরা সর্বোচ্চ ২৩১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কমিটি দেশের বিভিন্ন বড় জেলা ও শহর থেকে গম, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনিরের বাজার মূল্য সংগ্রহ করত: তার ভিত্তিতে ফিতরা ২০২২ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ফিতরা কত টাকা ২০২৩
ফিতরা কত টাকা ২০২৩ – ফিতরার পরিমাণ কত ২০২৩: গত বছর অর্থাৎ ফিতরা কত টাকা ২০২২ এ ফিতরার হার প্রতিজনে সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্ব্বোচ্চ ২,৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে সদকাতুল ফিতরা নির্ধারণ করার জন্য জাতীয় ফিতরা কমিটি রয়েছে। এই কমিটি ফিতরা নির্ধারণ করে থাকেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। উক্ত সভার মাধ্যমেই আসলে সাদাকাতুল ফিতর এর হার নির্ধারণ করা হয়।
তবে এই বছর গত ২৪ মার্চ ২০২৩ তারিখ হতে পবিত্র রোজা শুরু হয়েছে কিন্তু অদ্যাবধি এখনো পর্যন্ত ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করা হয়নি। আশা করছি অচিরেই তা নির্ধারিত হবে। এই বছর দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি থাকাই ফিতরা কত টাকা ২০২৩ এ ফিতরার হার প্রতিজনে সর্বনিম্ন ৮৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্ব্বোচ্চ ২,৫০০ টাকা নির্ধারণ হতে পারে (আনুমানিক)। যাই হোক ইসলামিক ফাউন্ডেশন হতে এই সংক্রান্ত আদেশ জারি হলেই আপনাদেরকে জানিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর সম্পর্কে FAQ
প্রশ্ন-১ঃ ফিতরা কি?
উওরঃ ফিতরা বা ফিতর আরবী শব্দ। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদার ব্যক্তি কর্তৃক বিতরণ করা দানকে ফিতর বা সদকাতুল ফিতর বলা হয়।
প্রশ্ন-২ঃ ফিতরা অর্থ কি?
উওরঃ ফিতরা বা ফিতর আরবী শব্দ। ইসলামী পরিভাষায় যাকে যাকাতুল ফিতর বা সদকাতুল ফিতর নামে অভিহিত করা হয়েছে।
প্রশ্ন-৩ঃ ফিতরা কখন দিতে হয়?
উওরঃ ফিতরা দেওয়ার উপযুক্ত সময় হলো ঈদ-উল-ফিতর এর দিন সুুুবহে সাদিক এর পর থেকে ঈদের নামাজের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত । তবে এর আগে ফিতরা আদায়ে কোনো বিধি নিশেষ নেই। এছাড়া কেউ যদি কোনো কারণে ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করতে না পারে তবে ঈদের পরেও তা আদায় করতে পারবে। তবে আমাদের প্রিয় নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বেই ফিতরা আদায় করতেন, যাতে গরিব-অসহায় মানুষ এই টাকায় কেনাকাটা করে ধনীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারে।
প্রশ্ন-৪ঃ ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে?
উওরঃ যাকাত শুধুমাত্র ফকির, গরীব, যাকাত আদায়কারী এবং যাদেরকে চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরদের মুক্তির জন্য। ইহাই হলো আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।' (সূরা তওবা: আয়াত ৬০)
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর সম্পর্কে শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আলোচনায় আমরা ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশাকরি আপনারা ফিতরা নিয়ে ভালো ধারনা পেয়েছেন। মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রোজা রাখার এবং সকল সম্পদশালী ব্যক্তিকে যার যার অবস্থান অনুযায়ী ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর আদায় করার তাওফিক দান করুন। ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে রোজার ভুল-ত্রুটিগুলো থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Tags: ফিতরা কত টাকা ২০২৩, যাকাতুল ফিতর এর সঠিক পরিমাণ 2023, ফিতরা 2023, সাদাকাতুল ফিতর ২০২৩ বাংলাদেশ৷ ২০২৩ সালের ফিতরা যত টাকা।
0 মন্তব্যসমূহ