আমলকি ভেষজ গুণে গুণান্বিত অনন্য একটি ফল। এর ফল এবং পাতা উভয়ই ঔষধে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলকি দারুণ কার্যকর। আমলকির ঔষধি গুণের জন্য এর নির্যাস এখন আয়ুর্বেদিক ওষুধেও ব্যবহৃত হয়।
আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা এবং কাগজী লেবুর চেয়ে যথাক্রমে ৩ গুন এবং ১০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি ভিটামিন সি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ বেশি এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
চলুন জেনে নিই আমলকি খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে-
১। আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের যত্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি শুধু চুলের গোড়া মজবুত করে না চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এটি খুশকির সমস্যা দূর করে এবং চুল পাকা প্রতিরোধ করে।
২। আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এটি পেট খারাপ এবং বদহজম প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
৩। এক গ্লাস দুধ বা পানিতে আমলকি গুঁড়ো এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দুবার খেতে পারেন। এটি অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।
৪। এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে অর্ধেক গুঁড়ো শুকনো ফল খেলে হজমের সমস্যা দূর হবে। খাবারের সঙ্গে আমলকির আচার হজমে সাহায্য করে।
৫। আমলকির রসের সাথে মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
৬। আমলকির রস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখের প্রদাহ প্রতিরোধ করে। চোখের চুলকানি বা জলের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। আমলকি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।
৭। প্রতিদিন আমলকির রস খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত মজবুত থাকে। আমলকির টক ও তেতো স্বাদ মুখের রুচি ও রুচি বাড়ায়। স্বাদ ও ক্ষুধা বাড়াতে আমলকির গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে পারেন।
৮। অনাক্রম্যতা বাড়ায় এবং চাপ কমায়। কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথায় আমলকি খুবই উপকারী। আমলকির রস ব্রঙ্কাইটিস ও হাঁপানির জন্য উপকারী।
৯। শরীর ঠান্ডা রাখে, শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, পেশী শক্তিশালী করে। এটি হৃৎপিণ্ড, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে এবং মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করে। আমলকির আচার বা মোরব্বা মস্তিষ্ক ও হার্টের দুর্বলতা দূর করে। শরীরের অপ্রয়োজনীয় চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।
১০। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কম রাখতেও উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করে।
0 মন্তব্যসমূহ