বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে আপনিও আপনার ব্যবসার পরিধি পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ করে ফেলতে পারেন। আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন , তবে আপনার জন্য বিকাশের বিশেষ সুবিধা হচ্ছে বিকাশের মার্চেন্ট একাউন্ট। আপনি বিকাশের মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে আপনার ক্রেতাদের থেকে পেমেন্ট নিতে পারবেন। আমরা অনেক সময় দেখি, বিভিন্ন কোম্পানি পেমেন্ট নিয়ে থাকে বিকাশের মাধ্যমে। তাদের এই পেমেন্ট নেয়ার জন্য বিকাশ থেকে মার্চেন্ট একাউন্ট করতে হয়েছে। এই পোস্টে আমরা আজকে বিকাশের মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা এবং অসুবিধা ও কিভাবে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলবেন এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বিকাশ হচ্ছে একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। আমাদের দেশের সবথেকে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হচ্ছে বিকাশ এর। সবাই তাদের প্রয়োজনে বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। সাধারণ মানুষ তাদের টাকা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাঠানোর জন্য বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। আবার, এজেন্টরা বিকাশ ব্যবহার করে প্রতি মাসে অনেক ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছে। বিকাশ শুধু সাধারণ মানুষ এবং এজেন্টদের জন্য নয়। একজন ব্যবসায়ী বিকাশ ব্যবহার করে সহজেই তার ব্যবসার পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, তবে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নিলে আপনার দোকানের ক্রেতারা বিকাশ থেকে ডিজিটালভাবে পেমেন্ট এর মাধ্যমে আপনার পন্য ক্রয় করতে পারবে। আপনি হয়তো ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছেন যে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা পেমেন্ট করে সুবিধা ভোগ করতে পারি। যেমন : বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে কিছু কিনলে বা কোনো সুপার শপ থেকে কিছু কিনলে বিকাশে পেমেন্ট করা যায়। এসব ক্ষেত্রে আবার অনেক সময় ডিস্কাউন্ট এবং ক্যাশব্যাক অফারও থাকে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম |
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার ক্রেতাদের থেকে ডিজিটাল ভাবে পেমেন্ট নিতে পারবেন। অর্থাৎ, মানুষ কাগজের টাকার বিনিময়ে আপনার থেকে পন্য বা সেবা না কিনে ডিজিটাল ভাবে বিকাশ এর মাধ্যমে পেমেন্ট করে কিনতে পারবে। বিকাশ যেহেতু একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, তাই বিকাশ এর মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিকাশের গ্রাহকরা ডিজিটাল ভাবে সব লেনদেন করতে পারে।
আপনি যদি একটি ব্যবসা পরিচালনা করেন, তবে বিকাশ এর মাধ্যমে আপনার দোকানের গ্রাহকদের থেকে পেমেন্ট নিতে পারবেন। গ্রাহকরা বিকাশ ব্যবহার করে আপনার দোকান থেকে সেবা নিতে পারবে। এক্ষেত্রে, কাগজের টাকার উপর নির্ভরতা কমে যাবে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা কি?
বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর সুবিধা রয়েছে অনেক। আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তবে আপনি এই মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধাগুলো ভোগ করতে পারবেন এবং আপনার দোকানের গ্রাহকরাও এসকল সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তো চলুন, বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর সুবিধাসমূহ দেখে নেয়া যাক।
- মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার লিমিটহীন সুবিধা: আপনি যদি একের অধিক মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে চান, তবে একটি আইডি থেকেই একের অধিক মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো বাধা-বাধ্যকতা নেই।
- অফার তৈরি করার সুবিধা: আপনি চাইলে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যেকোনো ধরণের অফার দিতে পারেন আপনার কাস্টমারদেরকে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনেকেই বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট নেয়ার সুযোগ তৈরি করে থাকে। আপনি চাইলে আপনার ব্যবসার বিক্রি বৃদ্ধি করতে মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন অফার দিতে পারেন।
- লেনদেনে আনলিমিটেড সুবিধা: বিকাশে সব ধরনের একাউন্টে লিমিট থাকে। অর্থাৎ, আপনি যেকোনো ধরণের লেনদেন করতে গেলে দেখবেন তার একটি লিমিট রয়েছে। তার বেশি আপনি বিকাশ ব্যবহার করে লেনদেন করতে পারবেন না। কিন্তু, বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর কোনো লিমিট নেই। আপনি মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে সর্বনিম্ন এক টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো পরিমাণে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থেই এই মার্চেন্ট একাউন্ট, তাই কোনো প্রকার লিমিট নেই।
- ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সুবিধা: আপনি চাইলে আপনার বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে যে ব্যালান্স আছে, সেগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু পরিমাণ আলাদা চার্জ দিতে হবে।
- অধিক লেনদেনে কিছু বিশেষ সুবিধা: আপনি যখন বিকাশের এই মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে বেশি বেশি লেনদেন করবেন, তখন লেনদেন বেশি হওয়ার সাথে সাথে আপনার থেকে বিকাশ চার্জ অনেক কম নিবে এবং আরও অনেক সুযোগ সুবিধা দিবে। মার্চেন্ট একাউন্ট এর এটি একটি বিশেষ সুবিধা।
- অনলাইনে সাইট থেকে পেমেন্ট রিসিভ সুবিধা: আমরা অনেক সময় কোনো ওয়েবসাইট থেকে কিছু কিনতে গেলে আমাদের ওয়েবাসাইটের মাদ্ধমেই বিকাশ থেকে পেমেন্ট করতে হয়। এক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে হয় না। আমরা আমাদের বিকাশ নাম্বার, ওটিপি এবং পিন দিলেই আমাদের পেমেন্ট অটোমেটিক হয়ে যায়। আপনি যদি একটি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট নেন, তবে বিকাশ অ্যাপ এর পাশাপাশি ওয়েবসাইটের মাদ্ধমেও পেমেন্ট নিতে পারবেন আপনার গ্রাহকদের থেকে।
উপরোক্ত সুযোগ সুবিধাসমূহ ছাড়াও বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর আরও অনেক সুবিধা রয়েছে। আপনি একটি মার্চেন্ট একাউন্ট নিলে পরবর্তীতে এসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিকাশ থেকে মাঝে মাঝেই মার্চেন্টদের জন্য বিশেষ অফার দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে এগুলো থেকেও অনেক সুযোগ পেতে পারেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধা কি?
বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে, ঠিক তেমনি কিছু অসুবিধা রয়েছে। তবে, সুবিধার সাথে তুলনা করলে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর অসুবিধা অনেক কম। তো চলুন, বিকাশ এর মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর অসুবিধাগুলো কি কি দেখে নেয়া যাক।
- আপনি শুধুমাত্র বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে পেমেন্ট নিতে পারবেন।কোনো মার্চেন্ট বা এজেন্ট থেকে পেমেন্ট নিতে পারবেন না।
- আপনার পার্সোনাল একাউন্ট থেকে যেকোনো সময় টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। কিন্তু, মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে হলে ব্যাংক এর মাধ্যমে বা এজেন্ট এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে হবে।
বিকাশ টাকা দেখার নিয়ম ও কোড ২০২৩
ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২০২৩
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে আমাদের কিছু জরুরি কাগজপত্র থাকতে হবে। এগুলো না থাকলে আপনি বিকাশ এর মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন না। তো চলুন, মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে আমাদের কি কি কাগজপত্র লাগবে সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
- আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি
- একটি টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- সচল একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
- কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা নেই এমন একটি মোবাইল নম্বর
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট
- মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতিপত্র ( এটা আবশ্যিক নয়)
উপরোক্ত জিনিসগুলো একটি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে গেলে অবশ্যই লাগবে। আপনি যদি একটি মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে চান, তবে এই তথ্য গুলো বিকাশ থেকে আপনার কাছে চাইবে। যদি কোনো একটি না থাকে, তবে অবশ্যই সেটি কালেক্ট করে নিবেন।
অনলাইনে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনে বিকাশের মার্চেন্ট একাউন্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট এর আবেদন ফর্মে ভিসিট করতে হবে। মার্চেন্ট একাউন্ট আবেদন এ ক্লিক করে বিকাশের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারবেন। এখানে একটি ফর্ম পাবেন। সেটি আপনার ব্যবসার সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করে নিন। এরপর আবেদন করলে বিকাশ থেকে আপনার দেয়া তথ্য যাচাই করে দেখে আপনাকে মার্চেন্ট একাউন্ট দিয়ে দিবে।
মার্চেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করার ফর্মটি সুন্দর ভাবে মনোযোগ দিয়ে পূরণ করবেন। কোনো ভুল তথ্য দিবেন না। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সকল তথ্য দিবেন। আপনার দোকানের নাম সহ ব্যবসার সকল তথ্য উল্লেখ করে দিবেন। সকল তথ্য উল্লেখ করার পর ক্যাপচা পূরণ করে ফর্ম জমা দিন বাটনে ক্লিক করে ফর্মটি জমা দিয়ে দিবেন।
মার্চেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করার নিয়ম
উপরে আমি বিকাশের যে মার্চেন্ট ওয়েবসাইটের লিংক দিয়েছি,সেখানে গেলে আপনি একটি সাইন আপ ফর্ম পাবেন। ফর্মটি মনোযোগ দিয়ে পূরণ করতে হবে। ফর্মের সকল বিষয় নিম্নে বিস্তারিত পেয়ে যাবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট ফর্ম |
মার্চেন্ট/দোকানের নাম : এই বক্সে আপনার দোকানের নাম উল্লেখ কর দিবেন সম্পূর্ণ নির্ভুল ভাবে।
জেলা নির্বাচন করুন : এখানে ক্লিক করে আপনার দোকান যে জেলায় অবস্থিত সে জেলা সিলেক্ট করে দিবেন।
এলাকা নির্বাচন করুন : জেলা নির্বাচন করার পর এলাকা নির্বাচন এ ক্লিক করে আপনার জেলার যে এলাকায় আপনার দোকান অবস্থিত, সে এলাকা সিলেক্ট করে দিবেন।
যোগাযোগ করবেন যার যাথে : এই বক্সে আপনার সম্পূর্ণ নাম লিখবেন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী।
ফোন নাম্বার : ফোন নাম্বার লিখুন বক্সে আপনার সচল একটি ফোন নাম্বার দিবেন। আপনাকে কল দিলে যেন পাওয়া যায় এমন একটি নাম্বার।
ইমেইল ঠিকানা : সচল একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস দিবেন। আপনাকে বিকাশ থেকে মেইল করা হবে। তাই, মেইলটি যেন আপনার এক্সেস এ থাকে।
অতিরিক্ত তথ্য যা আপনি জমা দিতে চান : এখানে আপনি আপানার সম্পর্কে বা আপনার ব্যবসা সম্পর্কে যে অতিরিক্ত তথ্য জমা দিতে চান, তা লিখে দিবেন।
আপনার কি জাতীয় পরিচয়পত্র আছে : এখানে হ্যাঁ কিংবা না সিলেক্ট করে দিবেন। আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে তবে হ্যাঁ সিলেক্ট করে দিবেন, কিন্তু না থাকলে না করে দিবেন।
আপনার কি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স আছে : আপনার ব্যবসার যদি ট্রেড লাইসেন্স থাকে, তবে এখানে হ্যাঁ সিলেক্ট করে দিবেন। না থাকলে না সিলেক্ট করে দিবেন।
ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার : আপনার যদি ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার থাকে এবং আপনি উপরের ধাপে হ্যাঁ সিলেক্ট করে থাকেন, তবে এই বক্সটি দেখতে পাবেন। এখানে আপনার ট্রেড লাইসেন্স এর নাম্বার লিখে দিবেন। উপরে যদি না সিলেক্ট করে থাকেন, তবে এই বক্সটি শো করবে না।
ট্রেড লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ : এই অপশনে আপনার ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ উল্লেখ করে দিবেন।
আপনার কি ব্যাংক একাউন্ট আছে : আপনার যদি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে এখানে হ্যাঁ সিলেক্ট করে দিবেন।
ক্যাপচা কোড : ফর্ম পূরণ করা শেষে একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পাবেন। এটি পাশের বক্সে লিখে দিবেন। যদি কোনো কারণে ক্যাপচাটি লোড না নেয়, তবে রিলোড দিবেন। অতঃপর, ক্যাপচাটি বক্সে লিখে দিবেন।
সবশেষে জমা দিন বাটনে ক্লিক করে এতক্ষন যাবত আপনার পূরণ করা ফর্মটি জমা দিয়ে দিন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট টাকা পাঠানোর নিয়ম
আপনি যদি একজন গ্রাহক হয়ে থাকেন, এবং বিকাশ মার্চেন্টকে টাকা পাঠাতে চান বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে, তবে সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন। এজন্য প্রথমেই আপনার ফোন থেকে বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে আপনার বিকাশ একাউন্ট এর পিন নাম্বার দিয়ে একাউন্ট এ ধুকবেন। এরপর পেমেন্ট অপশন এ ক্লিক করবেন। অতঃপর, যে মার্চেন্ট কে পেমেন্ট করবেন, তার নাম্বার বা QR CODE স্ক্যান করে আপনি যে পরিমাণ টাকা পেমেন্ট করতে চান, সেটি লিখে এন্টার করবেন। এরপর আপনার বিকাশ একাউন্ট এর পিন নাম্বার দিলে আপনার পেমেন্ট হয়ে যাবে।
এভাবেই আপনি একটি বিকাশ মার্চেন্টকে বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ কত?
আপনি যদি বিকাশ এর মার্চেন্ট হয়ে থাকেন, তবে আপনার দোকানের গ্রাহকরা এখন থেকে আপনার দোকান থেকে কোনো কিছু কিনে সেটি বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবে। আপনার দোকানের কাস্টমার যখন আপনাকে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করবে, তখন আপনার মার্চেন্ট একাউন্টে ব্যালান্স যোগ হবে। আপনি এই টাকা আবার ক্যাশ আউট করে বের করতে পারবেন। আমরা জানি না, বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট করলে চার্জ নেয়। ঠিক তেমনি মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট করলেও চার্জ দিতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতি ১০০ টাকায় ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং প্রতি ১ হাজার টাকায় ১৭ টাকা ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হবে। তবে, আপনি যদি বেশি বেশি লেনদেন করেন মার্চেন্ট একাউন্ট দিয়ে, তবে বিকাশ থেকে আপনাকে কিছু সুযোগ সুবিধা দিবে। যেমন : আপনার ক্যাশ আউট চার্জ কমিয়ে দিবে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর লিমিট কতো?
আমি শুরুর দিকেই উল্লেখ করে দিয়েছি যে, বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে কোনো প্রকার লিমিট নেই। আপনি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকলে আপনার প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে লেনদেন করতে হতে পারে। তাই, বিকাশ থেকে মার্চেন্টদের জন্য এই আলাদা সুবিধা দিয়েছে। আপনি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ১ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো পরিমাণে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
আপনি যত বেশি লেনদেন করবেন, বিকাশ থেকে তত বেশি সুবিধা দেয়া হবে আপনাকে। অনেক সময় বিভিন্ন ধরণের অফার দিয়ে থাকে বিকাশ থেকে। বেশি লেনদেন করলে ক্যাশ আউট চার্জ অনেক কম রাখবে। এছাড়াও, আরও অনেক অফার পাবেন যদি বেশি লেনদেন করতে পারেন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট লগইন
আমরা বিকাশ ব্যবহার করার জন্য বিকাশের অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। এটি প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর উভয় জায়গায় পাওয়া যায়। আপনি যদি একজন মার্চেন্ট হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য বিকাশের আলাদা একটি অ্যাপ রয়েছে। এটি ব্যবহার করে মার্চেন্ট এর সকল সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। bKash Merchant এ ক্লিক করে প্লে স্টোর থেকে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাপটি ইন্সটল করে নিতে পারেন।
বিকাশ থেকে আপনাকে মার্চেন্ট দিলে তবেই আপনি আপনার তথ্য দিয়ে মার্চেন্ট অ্যাপ এ লগিন করতে পারবেন। এবং এই অ্যাপ থেকেই আপনার মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। কাস্টমারের টাকা রিসিভ, আপনার ব্যালান্স এর টাকা ক্যাশ আউট, বিভিন্ন অফার নেয়া সহ সকল লেনদেন করতে পারবেন একটি অ্যাপ থেকেই।
বিকাশ মার্চেন্ট নিয়ে প্রশ্ন এবং উত্তর
নিম্নে আমি বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর উল্লেখ করে দিচ্ছি। এখানে থেকে আপনার মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে যত প্রশ্ন আছে, সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
বিকাশ মার্চেন্ট কি?
বিকাশ মার্চেন্ট এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তার ব্যবসার গ্রাহকদের থেকে সরাসরি পেমেন্ট না নিয়ে অনলাইনে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা কি?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি ১ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো পরিমাণে টাকা লেনদেন করতে পারবেন মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে। লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট একাউন্টের কোনো প্রকার লিমিট নেই।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কিভাবে পরিচালনা করে?
বিকাশ এর একটি মার্চেন্ট অ্যাপ রয়েছে। এটি প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর এ পাওয়া যাবে। এটি দিয়ে আপনি মার্চেন্ট একাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন। লেনদেনের সকল তথ্য এবং স্টেটমেন্ট এই অ্যাপ দিয়েই চেক করতে পারবেন।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি একজন মার্চেন্ট হতে চান, তবে আশা করছি এই পোস্ট থেকে মার্চেন্ট একাউন্ট এর সকল সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়াও, এই পোস্টে আমি কিভাবে মার্চেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করতে হয় সেটি ধাপে ধাপে উল্লেখ করে দিয়েছি। মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে আপনার যদি আর কোনো প্রশ্ন থাকে, তবে অবশ্যই মন্তব্য করবেন।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবারও বিকাশ নিয়ে অন্য কোনো পোস্টে দেখা হবে। আল্লাহ হাফেয।
0 মন্তব্যসমূহ